মহাশূন্য থেকে ছুটে আসছে অসম্ভব জোরে। একেবারে ঘাড়ের কাছে এসে পড়েছে। আর ঠিক দু’মাস পর এসে পড়বে পৃথিবীর নাগালের মধ্যে। আমাদের নীলাভ গ্রহটি থেকে মাত্র ৪৪ হাজার কিলোমিটার দূরে। পৃথিবী থেকে চাঁদ যতটা দূরত্বে রয়েছে, তার ৮ ভাগের এক ভাগেরও কম দূরত্বে এসে পড়বে গ্রহাণু ‘২০১২ টিসি-৪’। আকারে তেমন বড় না হলেও, উদ্বেগের কারণ রয়েছে যথেষ্টই। খুব জোরে ছুটে আসছে গ্রহাণুটি। আর তার কক্ষপথও পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না।
অক্টোবরের ১২ তারিখে পৃথিবীর
কাছেপিঠে থাকা মহাজাগতিক বস্তুদের (নিয়ার আর্থ অবজেক্ট) অন্যতম এই গ্রহাণুটি খুব সম্ভবত পৃথিবীর একেবারে কান ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ বা ‘এসা’)। গ্রহাণুটি লম্বায় ১৫ থেকে ৩০ মিটারের মধ্যে হবে বিজ্ঞানীদের অনুমান।
‘এসা’ জানাচ্ছে, গ্রহাণুটিকে নিয়ে উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ, আবিস্কারের পর গত ৫ বছরে এই গ্রহাণুটির ‘টিকি’র দেখা মেলেনি এক বারও। ফলে, তার কক্ষপথ এখনও ঠিক ভাবে বুঝে উঠতে পারছেন না জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাই আগামী ১২ অক্টোবর ওই গ্রহাণুটি ঠিক কতটা কাছে আসবে পৃথিবীর, তা শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠবে কি না, এখনও সে ব্যাপারে খুব সুনিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে ‘এসা’র তরফে জানানো হয়েছে। তা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়লে ভয়াবহ হতে পারে বলেও বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা।
এই গ্রহাণুটির প্রথম আবিষ্কার হয়েছিল ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর। হাওয়াই দ্বীপের প্যান স্টারস অবজারভেটরির টেলিস্কোপে। তখন তার দেখা মিলেছিল বৃহস্পতি আর শনি গ্রহের মাঝামাঝি একটা জায়গায়। তার পর গত ৫ বছরে বিজ্ঞানীরা আর তার হদিশ পাননি।
সম্প্রতি ‘এসা’ ও চিলিতে বসানো ইউরোপিয়ান সাদার্ন অবজারভেটরি (ইএসও)-র ভেরি লার্জ টেলিস্কোপের যৌথ অনুসন্ধানে আবার দেখতে পাওয়া গিয়েছে একটা ৩/৪ তলা বাড়ির আকারের এই গ্রহাণুটিকে।