স্মার্টফোনের সবচেয়ে ‘আনস্মার্ট’ কাজ হচ্ছে এর ব্যাটারির চার্জ থাকে খুব কম। যদিও এর পেছনে যৌক্তিক কারণও রয়েছে, তবুও স্মার্টফোনের এহেন আচরণে এর ব্যবহারকারীরা বেশ বিরক্ত।
যারা আগের ফিচার ফোন বা বার ফোন (যেমন: নকিয়া ১১০০ ) ব্যবহার করে বেশ মজা পেতেন তাদের জন্যে স্মার্টফোন এক বিরাট পেইনের নাম। কারণ আগের এসব ফোনে চার্জ থাকতো মিনিমাম দুই থেকে তিন দিন। তবে ওইসব ফোনে যেমন অপশন কম ছিল, তেমনি রেজুলেশনও ছিল কম।
আর এখনকার স্মার্টফোন অনেক অনেক উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন। আর নানা ধরনের সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি এর এইচডি রেজুলেশন এবং অন্যান্য স্মার্ট ফিচারের জন্যে প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই এসব ফোনে খুব দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। ফলে আমরা অনেক সময় এর ওপর বিরক্ত হয়ে যাই। তাই স্মার্টফোনকে যদি ‘স্মার্ট’ ভাবে ব্যবহার করা যায় তবে এর ব্যাটারির চার্জ কিছুটা হলেও রক্ষা করা সম্ভব।
তবে চলুন দেখে নেই কিভাবে ব্যাটারির চার্জ সেভ করবেন:
* সঠিকভাবে বন্ধ করা: যখনই আপনার ফোনের কোনো অ্যাপ্লিকেশনে ঢুকবেন, সেটার কাজ শেষ হলে তা থেকে ‘এক্সিট’ বা বের হয়ে আসবেন। কোনোভাবেই স্মার্টফোনের ‘হোম’ বাটন দিয়ে বের হয়ে আসবেন না। কারণ, আপনি যে অ্যাপ্লিকেশনে ঢুকেছিলেন আপনার কাজ শেষেও যদি সেখান থেকে পুরোপুরি বের হয়ে না আসেন, তবে তাতে আপনি কাজ করলে যে হারে চার্জ নষ্ট হতো, পুরোপুরি বের না হলে একই হারে চার্জ নষ্ট করে।
* অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল না করা: প্রয়োজন নেই বা ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে এমন কোনো অ্যাপ্লিকেশন অহেতুক ডাউনলোড করে রাখবেন না। কারণ, অ্যান্ড্রয়েড বা আইফোনের ফিচার হচ্ছে ইন্টারনেট কানেকশন পেলেই এসব অ্যাপ্লিকেশন তাদের আপডেট খুঁজতে থাকে। ফলে এদের আপনি ব্যবহার না করলে কী হবে, এরা আপনার ব্যাটারির চার্জ ঠিকই ব্যবহার করে!
* বাড়তি উজ্জ্বল্যতা: অনেক সময় আমরা অকারণেই মোবাইলের রেজুলেশন বাড়িয়ে রাখি। যদি আমরা ঘরের ভেতর বা ইনডোরে থাকি তবে মোবাইলের রেজুলেশন ৫০% থাকলেই যথেষ্ট। শুধুমাত্র রোদে গেলে বা দিনের আলোয় বাইরে গেলে এর রেজুলেশন বাড়িয়ে নিতে পারেন। কারণ, কিছু কিছু মোবাইল আছে যাদের স্ক্রিন রোদে বেশ ঝাপসা মনে হয়। অধিক রেজুলেশন মোবাইলের মূল্যবান চার্জ নষ্ট করে।
* প্রয়োজন ছাড়া অ্যাপ্লিকেশন চালু রাখা: কিছু প্রযুক্তি আছে যার ব্যবহার না জেনেই আমরা অন করে রাখি। যদিও এটা আমাদের কাজে লাগেনা, বা সবসময় আমার কাজে নাও লাগতে পারে। যেমন: লোকেশন অপশনটি কাজে না লাগলেও আমরা অন করে রাখি, যা আমাদের মোবাইলের চার্জ নষ্ট করে। একইভাবে ওয়াই-ফাই বা ব্লুটুথ যখন প্রয়োজন হবে তখন চালু করাই শ্রেয়।
* অধিক সাউন্ডে গেমস খেলা: গেমস খেললে এমনিতেই মোবাইলের চার্জ নিঃশেষ হয় দ্রুত। তার ওপর যদি বেশি সাউন্ড দিয়ে গেমস খেলা হয়, তবে এর চার্জ নিঃশেষ হয় ধারণার চেয়েও দ্রুত। তাই পরিমিত সাউন্ড দিয়ে বা কম সাউন্ড দিয়ে গেমস খেলা উচিত।
* পাওয়ার সেভারের ব্যবহার: আজকাল অনেক মোবাইলেই ‘পাওয়ার সেভার’ অপশন দেয়া থাকে। এতে আপনার মোবাইলের চার্জ একটা নির্দিষ্ট লেভেলে বা আপনার সুবিধাজনক অবস্থানে চলে আসলে এই অপশন চালু করে মোবাইলের চার্জ দীর্ঘ সময় ধরে রাখা যায়। তাই আপনার মোবাইলে যদি এই সুবিধা থেকে থাকে, তবে যখনই আপনার মোবাইলের চার্জ ১৫%-২০% এ নেমে আসবে, তখনই এই ফিচার অন করে দিলে মোবাইলের চার্জ অনেকক্ষণ ধরে ব্যবহার সম্ভব।
এছাড়াও অকারণে একটু পর পর মোবাইলের স্ক্রিন অন বা অফ করা, ভিডিও বা গান শুনে সঠিকভাবে বের না হলেও চার্জ নষ্ট হয়। এক কথায় আপনার মোবাইলের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমাতে পারলে এর চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখা সম্ভব।