জগিং, রোপ-জাম্পিং, ওয়েট লিফটিং, কার্ডিও বা অন্য যেকোনো ব্যায়ামে ব্যয় করা সময়ের পরিমাণ দিনের মাত্র চার শতাংশ! আপনি যদি ভেবে থাকেন, এই অল্প সময়ে একটু ঘেমে-নেয়ে ফিটনেস ঠিক রাখার ব্যাপারে পর্যাপ্ত কাজটি শেষ করে ফেলেছেন, তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন।
কারণ ফিট থাকার জন্য ব্যায়াম ছাড়াও আপনাকে পুষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুমানো সহ ব্যায়ামের আগে কিছু কাজের দিকে মনোযোগী হতে হবে। এগুলো শুধুমাত্র জিমে আপনার কার্যক্ষমতাই বৃদ্ধি করবে না, সাথে সাথে সলিড-মাসল গঠনেও পর্যাপ্ত সাহায্য করবে।
ব্যায়ামের আগে প্রয়োজনীয় কাজগুলোর ব্যাপারে জেনে নিন-
পর্যাপ্ত ঘুম:
যেকোনো ব্যায়াম শুরুর আগে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া জরুরি। আর বিশ্রাম পুরোপুরি আসে ঘুম থেকে। ব্যায়াম ছাড়াও বিভিন্ন কাজে ফোকাস রাখার জন্য, শরীরকে জড়তামুক্ত রাখার জন্য এর বিকল্প নেই। ঘুম আপনার হার্ট এবং ব্লাড ভেসেলগুলোর আরোগ্য লাভের ব্যাপারে সহযোগিতা করে।
পর্যাপ্ত পানি পান:
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য পানির গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা প্রত্যেকেই অবগত। ফিটনেস রুটিনেও এটি বেশ বড় ভূমিকা পালন করে। যখন আপনি ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আপনার নিশ্চিত হওয়া উচিত যে, আপনার শরীরে ঘাম ঝরানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি আছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে আপনি আপনার এনার্জি লেভেলের ভারসাম্য বজায় রাখছেন। অর্থাৎ যেখানে যতটুকু শক্তি প্রয়োজন, সেখানে ততটুকু শক্তি ব্যয় করার ব্যাপারে শরীরকে নির্দেশ করছেন।
হালকা খাবার:
অনেকেই একবেলা খাবার খাওয়ার পর ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। যদি আপনার মনে হয় যে, আপনার পূর্বে কোনো জলখাবারের প্রয়োজন নেই, তাহলে জোর করে কিছু খাওয়া নিষ্প্রয়োজন! কিন্তু যদি হালকা ক্ষুধা অনুভব করে থাকেন বা যদি দীর্ঘক্ষণ ব্যায়াম করার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে অবশ্যই হালকা নাস্তা করে যাওয়া উত্তম। যেমন: কলা, আপেল, রান্না করা ওটমিল, দুধ ইত্যাদি।
উপযোগী পোশাক নির্বাচন:
পরিধানের জন্য লাইটওয়েটের টি-শার্ট, ট্রাউজার, সোয়েটার জাতীয় কাপড় বাছাই করুন। খেয়াল রাখুন, এগুলো যেন পর্যাপ্ত ফ্লেক্সিবল হয় এবং সহজেই যেন এগুলো থেকে তাপ বের হতে পারে। মেয়েরা স্পোর্টস-ব্রা, জিম শর্ট, ইয়োগা প্যান্ট বা এ ধরনের কাপড়গুলো পরতে পারেন। ছেলেদের জন্য ট্রাউজার, থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট, স্পোর্টস প্যান্ট বা হাইকিং প্যান্টগুলো উত্তম। কটন বা পলিয়েস্টার জাতীয় কাপড় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম।
ওয়ার্ম আপ:
ওয়ার্ম আপ আপনার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে ‘রেঞ্জ অফ মোশন’ বৃদ্ধি করে। এছাড়াও জড়তা দূর করা সহ লম্বা সময় ধরে করা ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। সরাসরি বিশ্রাম থেকে কঠিন সব ব্যায়ামে শুরু করলে বিভিন্ন ধরনের ইনজুরির সম্ভাবনা থাকে।
তাছাড়া হঠাৎ করেই অতিরিক্ত তাপ বৃদ্ধির কারণে শরীর অল্প সময়েই ক্লান্ত হয় পড়ে। কিন্তু আপনি যদি মূল ব্যায়াম শুরুর আগে পুরো শরীরটাকে মিনিট দশেকের জন্য দড়িলাফ, জগিং, সাইড-টু-সাইড হোপস, হাফ জ্যাক সহ সাধারণ কিছু ব্যায়াম দিয়ে শুরু করেন, তাহলে আপনার শরীর এর পরের ধকলগুলো সহ্য করতে প্রস্তুত হয়ে যাবে। একটি পারফেক্ট ওয়ার্কআউট সেশন শেষ করতে সাহায্য করবে।