আমাদের এই উপমহাদেশে হলুদের ব্যবহার আজ থেকে আড়াই হাজার বছরের পূর্বে। আমরা রান্নার স্বাদ ও রং এর জন্য হলুদ ব্যবহার করি। রূপচচ্চাতেও হলুদের অনেক সমাদর। কিন্তু হলুদের এইসব ব্যবহার ছাড়াও বিশ্বব্যাপী হলুদের আরও অনেক গুণাবলী ছড়িয়ে পড়েছে।
হলুদ নিয়ে বর্তমানে অনেক গবেষণা হচ্ছে। এইসব গবেষণায় বের হয়ে আসচ্ছে নতুন নতুন তথ্য। এত জানা যাচ্ছে হলুদ মানব দেহের জন্য কত উপকারী। ইতিমধ্যে আমরা জেনে গেছি আমাদের অতি পরিচিত এই মসলা জাতীয় উপাদান হলুদ ক্যান্সারের মত রোগ সারাতে ভূমিকা রাখছে। আলঝেইমার ও অন্যান্য রোগ সারাতেও হলুদ কার্যকর।
তেমনি সারাবিশ্বে এখন ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন, অবসাদ। বর্তমান সময়ে এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সত্যিই কঠিন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আধুনিক জীবনযাপনই এইসব রোগের আঁতুড়ঘর। হলুদ খেলে কমতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিস। জানাচ্ছে ইউনিভার্সিটি অফ নিউক্যাসলের নিউট্রাসিউটিক্যাল রিসার্চ গ্রুপ।
এই সুপার মসলাটিতে এমন একটি উপাদার আছে যার নাম হচ্ছে ’কারকিউমিন’ যার প্রভাবে টাইপ টু ডায়বেটিস, প্রদাহজনিত সমস্যা. এন্টি-অক্সিডেন্ড এবং বয়সজনিত সমস্যা রুখে দেয়।
সাধারণত কারকিউমিন ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মেলবন্ধন দেখা যায়। এর ফলে প্রভাব পড়ে ইনসুলিন ক্ষরণে। মুখ্য গবেষক অধ্যাপক মনোহর গর্গ জানিয়েছেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৩০ থেকে ৭০ বছর বয়সী রোগীদের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়। দেখা গিয়েছে এই দুটি উপাদানই অত্যন্ত সুরক্ষিত। রোগীদের ৩ ভাগে ভাগ করা হয়।
প্রথম দলকে দেওয়া হয় কারকিউমিন, দ্বিতীয় দলকে শুধুই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, তৃতীয় দলকে দেওয়া হয় দুটি উপাদানের মিশ্রণ। ২০০ মিলিগ্রাম কারকিউমিনের সঙ্গে ১ গ্রাম ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এই অনুপাতে মেশানো হয়। দেখা গিয়েছে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই অসাধারণ কাজ করে এই দুইয়ের মিশ্রণ।
যদিও বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্নস্থানে এমনকি আমাদের দেশেও হলুদের ট্যবলেট আকারে পাওয়া যাচ্ছে পরিবেশনের জন্য। কিন্তু বিশেষঞ্জদের মতে তাজা হলুদ খাওয়াই বেশি উপকারী। বিশেষ করে যাদের টাইপ টু ডায়বেটিস আছে তাদের জন্য এই হলুদের একটি চমৎকার স্মুদির রেসিপি দেওয়া হল-
উপকরণ-
১ কাপ নারকেলের দুধ
১ টেবিল চামচ অর্গানিক নারকেল তেল
আধা কাপ কাটা আম বা ছোট ১টা কলা
অল্প দারচিনি গুড়া
অল্প মধু(ইচ্ছা)
হলুদ পেস্ট -পছন্দমত
এই সোনালি স্মুদিটা আপনি ঘুমাবার আগে পান করবেন।