নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি ও বিচার চাওয়ায় হত্যার ভয় দেখানোর ঘটনায় শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে এক কিশোরী (১৬)।
আগুনের তার মুখমণ্ডলসহ শরীরের প্রায় অধিকাংশ পুড়ে গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ওই কিশোরী এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শুক্রবার রাতে ফতুল্লার কাশিপুর খিলমার্কেট এলাকায় এঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় ধর্ষক ও ধর্ষকের মা এবং বন্ধুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে কিশোরীর মা লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্তরা হলো- মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান থানার কংসপুর গ্রামের মৃত. আব্দুল খোকা মিয়ার ছেলে (ধর্ষক) মৃদুল (২২), তার মা পারুল বেগম (৪২) এবং মৃদুলের বন্ধু মাহফুজ (২৪)। তারা প্রত্যেকেই ফতুল্লার কাশীপুর হাটখোলা সিকদার বাড়ি এলাকায় বসবাস করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দু’বছর আগে ওই কিশোরী জেএসসি পরীক্ষায় পাস করে আর লেখাপড়া করেনি। বাড়িতেই পারিবারিক কাজে সময় দিত। পাশের বাড়ির মৃদুল তাকে প্রায়ই উত্যক্ত করত। একপর্যায়ে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে মৃদুল।
ধর্ষণের সময় গোপনে ভিডিও ধারণ করে রাখে মৃদুলের বন্ধু মাহফুজ। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ফের একাধিকবার কিশোরীকে ধর্ষণ করে।
সম্প্রতি ওই কিশোরী তার মায়ের কাছে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও দিয়ে মৃদুলের ব্লাকমেইলিংয়ের ঘটনাটি জানায়। গত শুক্রবার বিকেলে কিশোরীর মা মৃদুলের মা পারুল বেগমকে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়ে বিচার দাবি করেন। এ অভিযোগ শুনে উল্টো পারুল বেগম কিশোরীর মাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। ওই সময় কিশোরীর মাকে হুমকি দিয়ে মৃদুল বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটের ছেড়ে দেয়া হবে।
এ হুমকির কথা শুনে ওইদিন রাতেই নিজ বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ওই কিশোরী। এ সময় আশপাশের লোকজন গিয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই আতাউর রহমান জানান, অভিযোগকারীরা কিশোরীর চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ধর্ষক ও তার বন্ধুর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তারা কেউ বাড়িতে নেই। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।