প্রোফাইল: নেইমার

প্রোফাইল: নেইমার

বিখ্যাতদের সফলতার গল্প’ সিরিজের এবারের এপিসোডে নিয়ে এসেছি একজন সেরা উদীয়মান ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার- নেইমার জুনিয়র। ফুটবলের নিয়ে কথা বলা হলে মেসি এবং রোনালদোর পরই আলোচনায় আসে নেইমার । আগের দুই পর্বে আমরা অপর দুই কিংবধন্তি গ্রেট মেসি এবং রোনালদোকে নিয়ে দুটি আলাদা আলাদা ভিডিও বানিয়েছি । যেখানে খুব সাধারণ পরিবার থেকে এক কঠিন পথ পারি দিয়ে তারের আজকের অবস্থানে উঠে আসার গল্প বলেছি ।

 

স্বপ্নের প্রতি তাদের কতটা ডেডিকেশন ছিল, কতটা পরিশ্রমী ছিলেন তা  আমরা দেখানোর চেষ্টা করেছি । মিস করে থাকলে  দেখে আসুন ভিডিও দুটি । তো শুরু হয়ে যাক, আজকের পর্ব- নেইমারের সংক্ষিপ্ত জীবনী, তার সফলতার গল্প।

আপনি যদি সমালোচিত না হন, তাহলে আপনি ভুল কাজটি করছেন।

নেইমার দা সিল্ভা স্যান্তোস জুনিয়র- যাকে আমরা সবাই নেইমার নামেই জানি । একজন চৌকস ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় যিনি স্প্যানিশ ক্লাব  বার্সেলোনা এবং ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে একজন ফরোয়ার্ড বা উইঙ্গার হিসেবে খেলেন । অন্য সব কিংবদন্তী খেলোয়াড়দের মত নেইমারেরও ফুটবল জীবন শুরু হয় অলি-গলিতে খেলে । তার বাবা সিনিয়র নেইমার দা সিল্ভা একজন প্রাক্তন ফুটবলার এবং পরবর্তীতে নেইমারের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন । নেইমার তাঁর পিতার ভুমিকা সম্পর্কে বলেন, “আমার পিতা আমার পাশেই থাকেন সেই ছোটবেলা থেকেই এবং তিনি সবকিছুর খেয়াল রাখেন । তিনিই আমার সব সময়ের সঙ্গী এবং আমার পরিবারের অন্যতম একজন ।‘

খুব কম বয়সেই একজন দক্ষ ফুটবলার হিসেবে বেড়ে উঠে নেইমার । মাত্র ১৭ বছর বয়সে নেইমার প্রফেশনাল ফুটবলার হিসেবে খেলা শুরু করেন, আর শুরু করার মাত্র দুই বছর পর ২০১১-২০১২ সালে সাউথ আমেরিকান ফুটবলার অ্যাওয়ার্ড নিজের নামে করে নেন । এছাড়াও আরও অসংখ্য পুরস্কার ঝুলে আছে তার ঝুড়িতে । চলুন তার আগে আমরা নেইমারের জীবনের উত্থানের কথা জেনে নেই ।

নেইমারের জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২, ব্রাজিলের মগি দাস ক্রুজেস নামক স্থানে । তার বাবা সিনিয়র নেইমার ডা সিল্ভা এবং মা নান্দিনি সান্তস । যেহেতু বাবা একজন প্রফেশনাল ফুটবলার ছিলেন, তাই প্রথম হাতেখড়িটা বাবার কাছেই । খুব অল্প সময়েই তিনি ব্রাজিলের সান্তস ফুটবল ক্লাব কর্তৃপক্ষের নজরে আসেন তিনি । ২০০৩ সালে সান্তস ফুটবল ক্লাব খেলায় চুক্তিবদ্ধ করেন নেইমারকে । এবং তাঁকে যুব একাডেমিতে খেলানো হয় । কয়েক বছর সান্তসের যুব একাডেমিতে এ থাকার পর এই ক্লাবেরই সিনিয়র টিমে তাঁকে সাইন করানো হয় । এভাবে তিনি ১৭ বছর বয়সে প্রফেশনাল ক্লাবে খেলা শুরু করেন । আর দেখতে দেখতেই সে তার টিমের একজন দক্ষ গোল মেকারে পরিণত হন । সান্তসের হয়ে ২২৫ ম্যাচে ১৩৬ গোল করেন তিনি ।

নেইমার মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্পেনের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে খেলার প্রস্তাব পেয়েছিলেন । কিন্তু ব্রাজিলে ওই সময়ে তার অদ্ভুত ট্যালেন্টের জন্য বিপুল অর্থের বিনিময়ে নিজেদের ক্লাবে খেলানোর জন্য তাঁকে রেখে দেয় । এদিকে নেইমার দিনে দিনে এই ক্লাবের হয়ে তার খেলার ধারাবাহিকতাকে আরও জোরালো করতে থাকে । নেইমার হয়ে উঠতে থাকলেন একজন নিখুঁত ফুটবল প্লেয়ার । তার খেলা দেখে বড় বড় ফুটবল ক্লাবগুলো তাঁকে নেয়ার জন্য আলোচনায় বসে গেল । ২৭ মে ২০১৩ সালে নেইমার প্রায় ৭৬ মিলিয়ন ডলারে বার্সেলোনায় হয়ে খেলার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন । ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলে নেইমার ব্রাজিলের একজন দারুণ সম্ভবনাময় খেলোয়াড় হিসেবে দলে খেলেছেন । এই বিশ্বকাপে তার দল ব্রাজিল ছিল ষষ্ঠ বিশকাপ জয়ের খোঁজে । কিন্তু চার ম্যাচ খেলায় পর দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি কোয়াটার ফাইনাল ইঞ্জুরিতে পড়েন । জার্মানির বিপক্ষে সেমিফাইনালে সে ম্যাচে তার খেলা হয়নি । আর ব্রাজিল ওই সেমিফাইনালে খুব বাজেভাবে হেরে যায় । নেইমার ইঞ্জুরি থেকে ফিরে আবারও আগের মত খেলা শুরু করেন, ২০১৪-২০১৫ সেশনে বার্সেলোনা হয়ে ৩৯ গোল করেন নেইমার । এখন পর্যন্ত তিনি বার্সেলোনার হয়ে ৪০৬ ম্যাচে ২৩৬ গোল করেন ।

ফুটবল বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বর্তমানে হয়ত মেসি কিংবা রোনালদোর প্রভাবে কিছুটা আলোচনার আড়ালে পড়ে আছেন নেইমার কিন্তু আগামী ৫ বছরের মধ্যে ফুটবল রাজত্ব চলে আসবে নেইমারের হাতে । আগামী দিনগুলোতে নেইমার আসলেই ফুটবল রাজত্ব করবে কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে । আপনার কি মনে হয়, নেইমার কি পারবে মেসি কিংবা রোনালদোকে ছাড়িয়ে যেতে? কমেন্ট করে জানান ।

আপনার আশে পাশে যদি এমন কোন মানুষ থাকে যার এই লেখাটি পড়া উচিত বলে মনে করেন , তার সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন । অনুপ্রেরণামূলক গল্প, সফল ব্যক্তিদের জীবনী, সফলতার সূত্র এবং জীবনের নানান সমস্যা আপনাদের পাশে আছে পাই ফিঙ্গার্স মোটিভেশন । আর আগামী পর্বে আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান কমেন্ট করে জানান । ভাল থাকুন ।

 

সফলতা কেবল আপনার জন্যই ।