প্রোফাইল: শ্রীদেবী

প্রোফাইল: শ্রীদেবী

বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর জন্ম ১৩ আগস্ট ১৯৬৩ সালে। ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী যিনি তামিল, তেলুগু, হিন্দি, মালয়ালম এবং কিছু সংখ্যক কন্নড় চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে প্রথম নারী সুপারস্টার বিবেচিত হন। নির্মাতা বনি কাপুরের দ্বিতীয় স্ত্রী ইনি। দুটি কন্যা সন্তানের মা তিনি। তার জন্ম তামিলনাড়ু অঞ্চলে। তবে বর্তমানে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন তিনি। বলিউডের একাধিক ব্যবসাসফল ছবির নায়িকা তিনি। শ্রীদেবীকে শেষবার রুপালি পর্দায় দেখা গেছে 'ইংলিশ ভিংলিশ' ছবিতে।

 

কিভাবে বলিউড সুপারস্টার হয়ে উঠেছিলেন শ্রীদেবী?

মাত্র চার বছর বয়স থেকে অভিনয় শুরু করেছিলেন শ্রীদেবী

১৯৭৮ সালে বলিউডে অভিষেক হয়েছিলো মায়াবী চোখ আর মিষ্টি হাসির নায়িকা শ্রীদেবীর।

শুধু হিন্দিতেই নয়, বরং তামিল তেলেগুসহ ভারতীয় নানা ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।

কোন সুনির্দিষ্ট নায়কের সমর্থন ছাড়াই অনেক সিনেমা ব্যবসা সফল হয়েছিলো তাঁর অভিনয় গুনে।

ভারতীয় চলচ্চিত্রে যখন পুরুষ অভিনেতাদের তুমুল দাপট এবং কাহিনি ছিলো নায়ক নির্ভর ঠিক সেই সময়েই শ্রীদেবী অভিনেত্রী হিসেবে অনেক সিনেমাকে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন।

বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিনয় তাকে পরিণত করেছিলো প্রবল জনপ্রিয় অভিনেত্রীতে।

আবার অনেক ভক্তের কাছে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন সৌন্দর্যের মাপকাঠি।

মূলত এসব কারণে তাকেই ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের প্রথম নারী সুপারস্টার মনে করেন অনেকে।

নায়িকা হিসেবে ৭৮ সালে হলেও তার আগে থেকেই অভিনয় করছিলেন বহু ভক্তের হৃদয়ে দেবীর আসন পাওয়া শ্রীদেবী।

মূলত অভিনয়জীবনে তার শুরু হয়েছিলো শিশুকালেই, মাত্র চার বছর বয়সে।

 

ভারতীয় চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকাদের একজন ছিলেন শ্রীদেবী

আর মোট প্রায় পাঁচ দশকের অভিনয় জীবনে তিনি অভিনয় করেছিলেন প্রায় দেড়শ সিনেমায়।

যার মধ্যে রয়েছে বক্স অফিস কাঁপানো মিস্টার ইন্ডিয়া, চাঁদনী, চালবাজ ও সাদমাসহ জনপ্রিয় অনেক সিনেমা।

তাঁর বিখ্যাত সিনেমা মিস্টার ইন্ডিয়ায় একজন রিপোর্টারের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি।

বহুমাত্রিক এই অভিনেত্রী মাঝে একবার বিরতিও নিয়েছিলেন তার কাজে।

১৯৯৭ সালে যুদাই ছবির মুক্তির পর চলচ্চিত্র শিল্প থেকে লম্বা সময়ের জন্য বিদায় নেন তিনি।

পরে ফিরে আসেন ২০১২ সালে ইংলিশ ভিংলিশ ছবির মাধ্যমে।

এ ছবিতে একজন মধ্যবয়সী নারী ইংরেজী ভাষা শিখছে এমন চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হন।

২০১৩ সালে তাকে পদ্ম শ্রী পদকে ভূষিত করে ভারত সরকার।

 

প্রায় দেড়শ সিনেমায় অভিনয় করেছেন শ্রীদেবী

তাঁর মৃত্যুর খবরে শোক ছড়িয়ে পড়েছে তার সহকর্মী শিল্পী ও ভক্তদের মধ্যে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করে বার্তা দিচ্ছেন বলিউড শিল্পীরা সহ অনেকেই।

অভিনেত্রী প্রীতি জিনটা টুইট বার্তা বলেছেন, "...আপনি সবসময় আমাদের হৃদয়ে থাকবেন"।

শোক প্রকাশ করে টুইট করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খানও।

অভিনেত্রী কাজল লিখেছেন, "শোকাহত। তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। তার কাছ থেকে অনেক শিখেছি"।

শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীও।

 

কিভাবে মারা গেলেন শ্রীদেবী?

স্বামী বনি কাপুর ও কন্যা খুশীকে নিয়ে দুবাইতে গিয়েছিলেন একটি পারিবারিক বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য।

মূলত ভাতিজা মোহিত মারওয়ার বিয়েতে যোগ দিতে দুবাই গিয়েছিলেন তিনি।

সেখানে হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অসংখ্য ব্যবসা সফল ছবির এই নায়িকা।

মৃত্যুকাল তাঁর বয়স ছিলো মাত্র ৫৪ বছর।

তাঁর ভাই সঞ্জয় কাপুর বলেছেন স্থানীয় সময় রাত এগারটা থেকে সাড়ে এগারটার দিকে মৃত্যুবরণ করেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।

 

 

যে সুপারহিট ছবিগুলির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীদেবী

ফাইল ছবি

সদ্য প্রয়াত হয়েছেন বলিউড সুপারস্টার শ্রীদেবী। গত শতকের আট ও নয় দশকে বলিউডে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন শ্রীদেবী। বেশ কিছু সিনেমার অফার তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, যেগুলি পরবর্তীকালে হিট হয়েছিল। দেখে নিন সেই সব সিনেমার তালিকা-

 

১। ‘বাহুবলী’ ছবিতে শিবগামীর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য প্রস্তাব গিয়েছিল শ্রীদেবীর কাছে। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।    

 

২। ২০০৩ সালের ‘বাগবান’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করার জন্য প্রথমে শ্রীদেবীর কাছে প্রস্তাব যায়। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় হেমা মালিনী সেই চরিত্রে অভিনয় করেন।

 

৩। ১৯৯৩ সালের সুপারহিট ছবি ‘বাজিগর’ সিনেমায় কাজল ও শিল্পা শেট্টির চরিত্র দু’টিতে দ্বৈত ভূমিকায় অভিনয় করার প্রস্থাব দেওয়া হয়েছিল শ্রীদেবীকে। 

 

৪। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বেটা’ ছবিতে অভিনয় করার জন্য প্রথমে প্রস্তাব এসেছিল শ্রীদেবীর কাছে। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় মাধুরী দিক্ষিত সেই চরিত্রে অভিনয় করেন।

 

৫। ১৯৯৩ সালে ‘ডর’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীদেবী। সিনেমায় নিজের চরিত্রটিকে অতি সাধারণ মনে হয়েছিল শ্রীদেবীর। তাই সেই চরিত্রে অভিনয় করতে চাননি তিনি। পরে জুহি চাওলা সেই চরিত্রে অভিনয় করেন। 

 

৬। ১৯৯৭ সালের হিট ছবি ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীদেবী। পরে মাধুরী দিক্ষিত সেই চরিত্রে অভিনয় করে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পান। 

 

৭। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মোহরা’ ছবিতে অক্ষয় কুমারের বিপরীতে অভিনয় করার প্রস্তাব যায় শ্রীদেবীর কাছে। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। রাবিনা ট্যান্ডন সেই চরিত্রে অভিনয় করেন।

 

৮। ২০০২ সালের সুপারহিট ‘শক্তি: দ্য পাওয়ার’ ছবিতে অভিনয় করার জন্য প্রথমে শ্রীদেবীর কাছে অফার যায়। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। পরে করিশ্মা কাপুর সেই চরিত্রে অভিনয় করেন। 

 

৯। স্টিভেন স্পিলবার্গের কালজয়ী ছবি জুরাসিক পার্ক (১৯৯৩) ছবিতে অভিনয় করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীদেবী।

 

মৃত্যু

তিনি ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের জুমেইরাহ এমিরেটস টাওয়ারের বাথরুমের বাথটাবের পানিতে দম আটকে মৃত্যু হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ছিল শুধুই একটি দুর্ঘটনা।