কলেজটিতে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় (বাণিজ্য) নিজস্ব শিক্ষক একজনও নেই। সরকারি হলেও প্রায় পাঁচ বছর ধরে খণ্ডকালীন (বাইরের) শিক্ষক দিয়ে কোনোমতে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখার চেয়ে খারাপ ফল করছেন বাণিজ্যের ছাত্রীরা।
নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত রংপুর শহরের সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের খণ্ডচিত্র এটি। কমবেশি প্রায় সব বিভাগেই শিক্ষকসংকট আছে। প্রতিবছর ছাত্রী বাড়লেও শিক্ষকের পদ বাড়ছে না। কয়েকজন শিক্ষক বললেন, সরকারের কাছে শিক্ষক চেয়েও তাঁরা পাচ্ছেন না। ফলে শিক্ষক ও ছাত্রী অনুপাত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১: ১৬৭। কলেজে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৯টি শ্রেণিকক্ষ আছে, প্রয়োজন ৬৩ টির।
উচ্চমাধ্যমিক থেকে শুরু করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে বর্তমানে কলেজে পড়াশোনা করছেন ৭ হাজার ৬৯৭ জন ছাত্রী। ১৯৮৪ সালে করা প্রশাসনিক সংস্কারসংক্রান্ত এনাম কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী যেসব বিভাগে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়, সেগুলোতে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষক থাকার কথা। সেই সুপারিশ অনুযায়ী কলেজটিতে মোট শিক্ষক থাকার কথা ১০৭ জন, আছেন ৪৬ জন।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে কলেজটির এমন বিভিন্ন সমস্যার কথা জানা গেল। রংপুর শহরের শালবন এলাকায় ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি সরকারি হয় ১৯৭৯ সালে।
শিক্ষক ও ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শিক্ষকসংকটই কলেজের বড় সমস্যা। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে এখানে উচ্চমাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা খোলা হয়েছে। এই শাখা থেকে ইতিমধ্যে চারটি ব্যাচ এইচএসসি পরীক্ষাও দিয়েছে। কিন্তু সরকার পাঁচ বছরেও কোনো শিক্ষক পদায়ন করেনি। নিরুপায় হয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ বেসরকারি কলেজের তিনজন শিক্ষককে খণ্ডকালীন নিয়োগ দিয়েছে।
কয়েকজন শিক্ষক বললেন, এতে তিন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। প্রথমত, খণ্ডকালীন শিক্ষকেরা তাঁদের সুবিধামতো ক্লাস নেন। দ্বিতীয়ত, কলেজ কর্তৃপক্ষ আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়ছে। আর এই শাখার ছাত্রীরা অন্য শাখার চেয়ে খারাপ ফল করছে।