চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম হ্রদ। এটি ১৯২৪ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে খনন করা হয় এবং সেসময় পাহাড়তলী লেক হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ইংরেজ রেল প্রকৌশলী ফয়-এর নামে নামকরণ করা হয়। এই লেকটি তৈরির উদ্দেশ্য ছিল রেল কলোনিতে বসবাসকারী লোকদের কাছে পানি পৌঁছানো।
বর্তমানে এটির মালিকানা বাংলাদেশ রেলওয়ের। বেশ বড় মাপের (৩৩৬ একর জমির উপর) এই লেকটি পাহাড়ের এক শীর্ষ থেকে আরেক শীর্ষের মধ্যবর্তী একটি সংকীর্ণ উপত্যকায় আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সৃষ্ট। বাঁধটি চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকের পাহাড় শ্রেণীর থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহের দিক পরিবর্তনের মাধ্যমে এই লেকটিকে সৃষ্টি করেছে। ভূ-তাত্ত্বিকভাবে এইসব পাহাড় শ্রেণী দুপিটিলা স্তর সমষ্টির শিলা দ্বারা গঠিত। ফয়’স লেকের পাশেই আছে চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় বাটালি পাহাড়।
পাহাড়তলী রেলস্টেশনের দক্ষিণ কোল ঘেঁষে আরেকটি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে। ফয়’স লেক তৈরির পূর্বে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৯২০ সালে এটি খনন করে। দুটি লেকই আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দেশি বিদেশী পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। চট্টগ্রাম শহরের ব্যাপক এলাকায় বিশেষ করে নিকটবর্তী রেলওয়ে কলোনিতে পানি সরবরাহের জন্য এই জলাধার দুটি খনন হয়েছিলো।
বর্তমানে হ্রদটি কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড একটি বিনোদন পার্ক স্থাপন করেছে যেখানে দর্শনার্থীদের জন্য লেকে নৌকা ভ্রমন, রেস্তোরাঁ, ট্র্যাকিং এবং কনসার্ট এর আয়োজন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এখানে বিরল প্রজাতির পাখি এবং ডিয়ার পার্কে হরিণ দেখার ব্যবস্থা আছে। ফয়’স লেকের পাশেই অবস্থিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এছাড়াও দর্শনার্থীরা কটেজ ভাড়া করে থাকতে পারেন। ফয়’স লেকের আশেপাশের মনোরম পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে প্রতি বছর দেশি বিদেশি বহু পর্যটক ছুটে আসেন।