বিমান বাহিনী জাদুঘর ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম বিমান জাদুঘর। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর গৌরবময় ঐতিহ্যের ইতিহাস, সাফল্য ও উন্নয়নের ক্রমবিকাশকে সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে এই জাদুঘর ২০১৪ সালে উন্মু্ক্ত করা হয়।
অবস্থান :
এই জাদুঘরের পশ্চিমে রয়েছে রোকেয়া সরণি ও কম্পিউটার সিটি (আইডিবি ভবন) এবং পূর্বে রয়েছে তেঁজগাও বিমান বন্দরের সুবিশাল রানওয়ে ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার। উত্তর দিকে রয়েছে সুদৃশ্য লেক এবং দক্ষিণে সবুজ বৃক্ষসারি ও বনানী।
পটভূমি :
১৭ জুন ১৯৮৭ সালে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘরের গোড়া পত্তন হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বেগম রোকেয়া সরণি সংলগ্ন তেঁজগাও বিমান বন্দরের রানওয়ের পশ্চিম পার্শ্বে মনোরম পরিবেশে আরও সুবিন্যস্ত ও সুগঠিতভাবে পূণর্গঠন করা হয় এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এই বিমান জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন এয়ার মার্শাল এনামুল বারী।
উল্লেখযোগ্য সংগ্রহ :
মূলত বিভিন্ন সময়ের হেলিকপ্টার ও বিমান দিয়েই এই জাদুঘর সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ
বলাকাঃ বলাকা বাংলাদেশের প্রথম যাত্রীবাহী বিমান। রাশিয়ার তৈরি এই বিমানটি বাংলাদেশে আসে ১৯৫৮ সালে।
এয়ার টুওরারঃ ট্রেইনিংয়ে জন্য এই বিমান ব্যবহার করা হয়। ১৯৯৭ সালে নিউজিল্যান্ডের তৈরি এই বিমান বাংলাদেশ বিমান বাহিনিতে যোগ হয়।
পিটি-৬ঃ ১৯৮৫ সালে চিনের তৈরি এই বিমানটি বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যুক্ত হয়।
ফুগাসি এম-১৭০ঃ ফ্রান্সে ১৯৬০ সালে তৈরি করা এই বিমানটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয় ১৯৯৭ সালে।
গ্লাইডারঃ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আকাশ অভিজ্ঞতার জন্য জার্মানির দেওয়া এই বিমানটি বাংলাদেশে আনা হয় ১৯৮২ সালে।
এয়ারটেক কানাডিয়ান ডিএইচ ৩/১০০০ঃ কানাডার তৈরি এই বোমারু বিমানটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম সুমদ্র বন্দরে সফল অভিযান পরিচালনা করে।
হান্টার বিমানঃ মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশকে ভূমি শত্রু থেকে রক্ষা করতে এই বিমানটি ব্যবহার করে। ভারতীয় বিমানবাহিনী বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে এই বিমানটি উপহার দেয়।
এছাড়াও আছে এফটি-৫, মিগ-২১, জি নাট, এফ৬, এ৫-১১১।
জাদুঘরের সময়সূচী :
বিমান বাহিনী জাদুঘর সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং শুক্র থেকে শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। ২০ টাকা মূল্যের টিকেট সংগ্রহ করে জাদুঘরে প্রবেশ করা যায়। এছারাও ৩০ টাকার টিকেটের বিনিময়ে ভেতরের হেলিকাপ্টার বা বিমানে উঠা যায়।