সারা যাকের একজন বাংলাদেশী মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেত্রী, উদ্যোক্তা এবং সমাজকর্মী। নাট্যকলায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
শিক্ষাজীবন :
তিনি প্রথমে বিজ্ঞানের কঠিনতম অংশ বায়োকেমিস্ট্রিতে পড়া শুরু করেন, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে তিনি পড়াশুনা বন্ধ করে দেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর অর্জন করেন। এছাড়া ১৯৮১ সালে তিনি ব্রিটিশ থিয়েটার ইনিস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
কর্মজীবন :
সারা যাকেরের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৯৫ সালে বাজার গবেষণা ক্ষেত্রে কাজ করার মাধ্যমে। তিনি বাংলাদেশের বাজার গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান এমআরসি মুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি নয়নতারা কমিউনিকেশন নামে প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হবার পর তিনি সেখানে প্রকল্প প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। নয়নতারা সিসিম ওয়ার্কশপ নিউইয়র্ক কর্তৃক নির্মিত সিসিমপুর, ইংরেজী সিসিম স্ট্রিট এর বাংলায় অনুদিত অনুষ্ঠানে সহ-প্রযোজক ছিল। এছাড়াও, তিনি এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশন লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ পরিচালক, এশিয়াটিক ইভেন্ট মার্কেটিং লিমিটেডের পরিচালক এবং ধ্বনী চিত্র লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
অভিনয় :
সারা যাকের ১৯৭৩ সাল থেকে মঞ্চে অভিনেত্রী হিসেবে সক্রিয়। তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করেন, যা বাংলাদেশের একটি অন্যতম থিয়েটার দল যারা মলিয়েরের Les Femmes Savantes, এডওয়ার্ড আলবির Everything in the Garden, আলবেয়ার কামুর Le Malentendu, বের্টোল্ট ব্রেশ্টের The Good Person of Szechwan এবং Mr Puntila and his Man Matti, কার্ল জুকমেয়ারের The Captain of Kopenick, উইলিয়াম শেকসপিয়রের ম্যাকবেথ, ইরউয়িন শ’য়ের Bury the Dead এবং আন্তন চেকোভের The Sea Gull অবলম্বনে নাটক নির্মাণ করেছে।
তিনি এক হাজারেরও বেশি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বাকি ইতিহাস নাটকে কনা; তে/শুই তা (১৯৭৬), পরিচালক আলী যাকের, সহ-শিল্পী আসাদুজ্জামান নূর এবং আবুল হায়াত; এবং ঈর্ষা নাটকে যুবতীর চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি সমালোচক কর্তৃক প্রসংশিত মুখোশ (১৯৯৩) এর পরিচালনা করেন, (এরিয়েল ডর্ফম্যানের ডেথ এন্ড দ্য মেইডেন অবলম্বনে নির্মিত)। এই নাটকে হায়াত আইনজীবী এবং নূর ডাক্তার হিসেবে অভিনয় করেন।
কর্মকান্ড :
সারা যাকের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
পারিবারিক জীবন :
সারা যাকের টেলিভিশন অভিনেতা আলী যাকেরকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান ইরেশ যাকের এবং শ্রিয়া যাকের। ইরেশ এবং শ্রিয়া উভয়ই এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশন লিমিটেডে যথাক্রমে এক্সিকিউটিভ পরিচালক এবং ব্রান্ড কমিউনিকেশন ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।
পুরস্কার ও সম্মাননা :
শিল্পকলায় (নাটক) বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৭ সালে একুশে পদক লাভ করেন।