এস. এম. এ. রাশীদুল হাসান একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষতা করেছেন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা :
রাশীদুল হাসানের জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার বড়শিজা গ্রামে। তাঁর মায়ের নাম খাদিজা বেগম, এবং বাবার নাম মৌলবি মোহাম্মদ আবু সাঈদ। ভাবতা আজিজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯৪৯ সালে তিনি ঢাকার ইসলামিয়া ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই.এ. পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৫২ সালে বি.এ. (অনার্স) ও ১৯৫৪ সালে এম.এ. (মাস্টার্স) ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন :
তাঁর শিক্ষকতা জীবন শুরু হয় নরসিংদী কলেজে শিক্ষকতা শুরুর মধ্য দিয়ে। এক বছর সেখানে শিক্ষকতা করার পর তিনি চলে যান পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে, এবং সেখানেও প্রায় তিন বছর শিক্ষকতা করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি কলকাতায় চলে যান, এবং সেখানকার কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তাঁর জীবনের সর্বশেষ কর্মক্ষেত্র ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢা.বি.'র ইংরেজি বিভাগে তিনি ১৯৬৭ সালে প্রভাষক পদে যোগ দেন এবং ১৯৭০ সালে সেখানকার সিনিয়র প্রভাষক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
মৃত্যু :
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর এ দেশীয় সহযোগীরা তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই অপর শিক্ষক আনোয়ার পাশার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। ২২ দিন পর অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের মৃতদেহের সাথে তাঁর লাশ ঢাকার মিরপুরের রায়েরবাজার বদ্ধভূমিতে পাওয়া যায়।
৩রা নভেম্বর, ২০১৩ সালে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন এবং আশরাফুজ্জামান খান কে ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে রাশীদুল হাসান এবং আনোয়ার পাশা সহ ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সন্মাননা ও পুরস্কার :
বাংলাদেশ সরকারের ডাক বিভাগ ১৯৯১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে এস.এম.এ রাশীদুল হাসানের নামে স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার সম্মাননায় ভূষিত করে