৫০০ জন চিকিৎসক করোনার চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫০০ জন চিকিৎসকের তালিকা তৈরি ও তাদের প্রস্তুত রাখবে।
সোমবার বিকালে করোনাভাইরাস নিয়ে সচিবালয়ে জরুরি ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয়ভাবে সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ ১০ নির্দেশনা দিয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি থাকবে। তবে এ ছুটি কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি সেবার জন্য প্রযোজ্য হবে না।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, লকডাউন বলে কিছু নেই। দরকার সোশ্যাল ডিসট্যান্স। সরকার সব সময় এটাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করেছেন। নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন। বাংলাদেশ কিন্তু এটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের ডাক্তারদের ভালো করে তোলার সামর্থ্য আছে। আতঙ্কের কিছু নেই। এখন এমন একটি সময় এসেছে যখন সমস্ত জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের পুলিশ-আনসার একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা সাংবাদিকরাও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণের বিষয়টাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিন্তু রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান, ২৬ মার্চের সব অনুষ্ঠানও কিন্তু বাতিল করেছেন। জনগণের দিকে তাকিয়ে এটা করেছেন তিনি।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। এতে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। এ ছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ৯৯ হাজার মানুষ।
বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৩ জন। সেলফ ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন প্রায় ১৮ হাজার মানুষ। তাদের অধিকাংশই বিদেশফেরত। করোনার বিস্তাররোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর।
চারটি দেশ ও অঞ্চল ছাড়া সব দেশ থেকেই যাত্রী আসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব বিপণিবিতান। এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে।