আজ শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে জানান দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করে আরও ৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন চারজনের দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের নিয়ে আক্রান্ত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে।
এই ভাইরাসে নতুন করে কেউ আর মারা যাননি বলে জানায় আইইডিসিআর। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন।
মীরজাদী সেব্রিনা জানান, সবশেষ শনাক্ত হওয়া করোনায় আক্রান্ত চার ব্যক্তির মধ্যে একজন পুরুষ, তিনজন নারী। তাঁদের মধ্যে দুজন ঢাকার, দুজন ঢাকার বাইরের। চারজনের মধ্যে দুজন চিকিৎসক। বাকি দুজনের পেশা উল্লেখ করেননি আইইডিসিআর পরিচালক।
নতুন আক্রান্তদের বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি জানান, চারজন বয়সের বিভাজনে ২০-৩০ বছর বয়সের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে একজন এবং ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে একজন।
মীরজাদী সেব্রিনা জানান, চার ব্যক্তির মধ্যে তিনজন আগে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন। আরেকজন কীভাবে আক্রান্ত হলেন, তা এখনো জানা যায়নি।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, নতুন ও পুরোনো—সব আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তাঁদের মধ্যে কোনো জটিলতা নেই।
করোনায় সতকর্তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক সেব্রিনা বলেন, আমাদের সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণের আজকের দ্বিতীয় দিন চলছে। এ পর্যন্তু আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের আদেশ-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে জনস্বার্থে যে আদেশ ও নির্দেশনা দেয়া হয়, সেগুলো আপনারা অবশ্যই মেনে চলবেন। জনগণের ভালোর জন্য, জনগণের সুস্থতা-স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে সরকারি পদক্ষেপগুলো নিয়েছি।
‘অবশ্যই ঘরের বাইরে যাবেন না, ঘরের ভেতরে থাকবেন। ঘরের ভেতরে থেকে যে বিষয়গুলো চর্চা ও পরিচর্যা করতে বলে থাকি, সেগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
তিনি জানান, ইতিমধ্যে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন। কাশি শিষ্টাচার অবশ্যই মেনে চলবেন। নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন। অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করবেন না। যাদের বয়স ষাটোর্ধ্ব কিংবা যাদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, তারা অবশ্যই অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করে নিজের ঘরের ভেতরেই থাকবেন। একদম নিজের ঘর থেকে বের হবেন না।
কারও সঙ্গে হাত-মেলানো, কোলাকুলি করা থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানান সেব্রিনা। ‘আমাদের পরিকল্পনায় যে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল, তাতে রোগের বিস্তারটাকে ভাগ করে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যত ধীরে ধীরে রোগের বিস্তার হচ্ছে, সেই অনুসারে প্রস্তুতিটাকে পরবর্তী ধাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছি’-যোগ করেন আইইডিসিআরের পরিচালক।
দেশে করোনার বিস্তার অনুযায়ী এ-সংক্রান্ত প্রস্তুতি পরের ধাপে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মীরজাদী সেব্রিনা। তিনি বলেন, নমুনা সংগ্রহের পরিসর বাড়ানো হয়েছে। জেলা পর্যায়েও হট লাইন চালু হয়েছে।
জ্বর বা কাশি হলেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত ভেবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, ভেবে বিচলিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না। আপনার দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর ছাড়াও স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ নাম্বারটি আছে, সে নম্বরে আপনারা যোগাযোগ করুন। সেখানে অন্যান্য পরামর্শের পাশাপাশি এটি কোভিড-১৯ কিনা সে বিষয়েও পরামর্শ দেয়া হবে।