গির্জার উপাসনায় যোগদান ছাড়াও খ্রিস্টানদের বড়দিন পালিত হয় নানাভাবে । তবে গির্জায় উপস্থিত হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ যেমন তেমনই জনপ্রিয় রীতি । বড়দিনের আগে ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চ নেটিভিটি উপবাস পালন করে থাকে । আর এদিন সন্ধেবেলাতেই নেওয়া হয় বড়দিনের শেষ প্রস্তুতি । যেসব দেশে খ্রিস্টান সংস্কার খুব বেশিরকম সেসব দেশে ধর্মের সঙ্গে আঞ্চলিকতা ও লোকসংস্কৃতি মিলেমিশে যাওয়ায় বড়দিন উদযাপনে নানা বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় । যেমন অনেক ক্যাথলিক দেশে ক্রিসমাসের আগের দিন ধর্মীয় শোভাযাত্রা বা কুচকাওয়াজ পথ পরিক্রমা করে । কোনও কোনও দেশে সান্তা ক্লজ কিম্বা ক্রিসমাসের বিভিন্ন চরিত্রদের নিয়ে শোভাযাত্রা বের করার রেওয়াজ আছে । তবে ক্রিসমাসের বহুকালের প্রচলিত অন্যতম রীতি হল বাড়ি-বাড়ি পারিবারিক সাম্মেলন এবং উপহার আদান প্রদান । কোনও কোনও দেশে ওই রীতি পালিত হয় ছয় ডিসেম্বরের নিকোলাস দিবসে অথবা ছয় জানুয়ারির এপিফেনির দিন । বড়দিনের উৎসবের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল খাওয়া-দাওয়া । খাদ্যতালিকা অবশ্য একেক দেশে একেকরকম হয় । যেমন সিসিলি প্রভৃতি অঞ্চলে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় যে ভোজসভা হয় তাতে থাকে প্রায় বারো রকমের মাছ । ইংল্যান্ডসহ আরও কয়েকটি ইংরেজি সংস্কৃতির দেশে বড়দিনের খাওয়া দাওয়ায় থাকে উত্তর আমেরিকা থেকে আনা টার্কি, আলু, শাকসব্জি, সসেজ, গ্রেভি ছাড়াও থাকে পুডিং, মিন্স পাই ও ফ্রুট কেক । পোল্যান্ড, পূর্ব ইউরোপ ও স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের খাওয়া-দাওয়ায় মাছের উপস্থিতিটা বিশেশভাবে লক্ষ্য করা যায় । তবে বড়দিনে এসব অঞ্চলে ভেড়ার মাংসের খুব চল আছে । যেমন জার্মানি ও অস্ট্রিয়ায় হাঁস ও শুকরের মাংসের চল বেশি । ফিলিপিনে যেমন সবথেকে জনপ্রিয় হল হ্যাম । খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে ঘর-বাড়ি সাজানোর রীতি-রেওয়াজে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় প্রায় সব দেশে । তবে তার মধ্যেও কিছু বিশেষত্ব থাকেই।