ঠিক ১০০ বছর আগে ‘গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ’ বা মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্বের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন কিংবদন্তি বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন৷ কিন্তু এতদিন তাঁর এই তত্ত্বের সরাসরি কোনও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল না৷ অবশেষে প্রমাণিত হল তিনি ১০০ শতাংশ ঠিক৷ অর্থাত্ মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব রয়েছে৷ প্রমাণিত হল ‘গ্র্যাভিটেশনাল কন্সটাণ্ট’ বা মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের মাপজোকে কোনও ভুলই করেননি আইনস্টাইন৷ দীর্ঘ কয়েক বছরের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব নিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন আমেরিকার লেজার ইণ্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরির (লিগো) গবেষক ও বিজ্ঞানীরা৷
বৃহস্পতিবার মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাবিশ্বজুড়ে অবিরত প্রবাহিত হচ্ছে তীব্র মহাকর্ষীয় তরঙ্গ৷ বিভিন্ন মাত্রায় প্রবাহিত এই তরঙ্গ কখনও প্রসারিত কখনও সঙ্কুচিত হচ্ছে৷ মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইন তাঁর আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বের ব্যাখ্যায় এর অস্তিত্বের কথা বলে গিয়েছিলেন৷ শত বছর পরে এই তরঙ্গের আবিষ্কার মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে, সৃষ্টি তত্ত্বের রহস্য উন্মোচনে এবং গ্রহ-নক্ষত্র ও ছায়াপথের জন্ম-রহস্য ব্যাখ্যা করতে নতুন দিশা দেবে৷ আর যদি এই জন্ম-রহস্য বা সৃষ্টি-তত্ত্বের ঐতিহাসিক কিনারা করা যায়, তাহলে তা হবে আগুনের ব্যবহার, ইঞ্জিন বা টেলিস্কোপ আবিষ্কারের মতো যুগান্তকারী ঘটনা৷ এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গের মধ্যে নিহিত রয়েছে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের জন্ম-বৃত্তান্ত৷ আমেরিকাভিত্তিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানীদের নিয়ে তৈরি ‘লিগো’ সংস্থায় উঁচুপদে কাজ করছেন বেশ কিছু ভারতীয় স্বনামধন্য বিজ্ঞানী৷ এই ঐতিহাসিক আবিষ্কারে তাঁদের বিরাট
ভূমিকা রয়েছে৷ তাঁদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিননন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
সংস্থার বিজ্ঞানীরা বৃহস্পতিবার ব্যাখা দিয়েছেন আনুমানিক ১৪০০ কোটি বছর আগে মহাবিস্ফোরণ বা ‘বিগ ব্যাং’-এর ফলে ব্রহ্মাণ্ডজুড়ে যে উত্তাল ঢেউয়ের জন্ম হয়েছিল সেটাই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ৷ লক্ষ আলোকবর্ষ পেরিয়ে এই তরঙ্গ এখনও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডজুড়ে ঢেউয়ের মতো ছড়িয়ে পড়ছে৷ ফলে দ্রুতহারে প্রসারিত হয়ে চলেছে এই ব্রহ্মাণ্ড৷ একইসঙ্গে লক্ষ কোটি আলোকবর্ষজুড়ে প্রসারিত হয়ে চলেছে এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গের পরিধিও