১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন ‘গণজাগরণ মঞ্চ’র পাঁচ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১৩ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পর একদল তরুণ-তরুণী শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয়ে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাতে শুরু করে, যা পরে স্বতঃস্ফূর্ত একটি আন্দোলনে রূপ নেয়।
এরপর একের পর শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিও কার্যকর করা হয়। কিন্তু এখন এই আন্দোলন তেমন করে আর চোখে পড়ে না। নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলের জের ধরে সরকারপন্থিদের একটি অংশ সরে দাঁড়ানোয় ভাঙনেরও মুখোমুখি হয়েছে এ আন্দোলনের সংগঠকরা।
এমন প্রেক্ষাপটে এখন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মকাণ্ড কি?
এমন প্রশ্নের জবাবে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যমুক্ত সমাজ করতে মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্খা তার জন্য লড়াই অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ, শিশু হত্যা কিংবা অর্থকড়ি লুটপাটের প্রতিবাদ সবই অব্যাহত ছিলও। কয়েক মাস আগে আমাদের কর্মসূচিতে হামলা হয়। আরেকটি কর্মসূচি ঘিরে আমিসহ অনেকের নামে মামলা হয়েছে। এরপরই কিছুটা স্থবিরতা এসেছিল। কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
কিন্তু এখন কি আর মানুষের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে? জবাবে ইমরান বলেন, ‘এটা স্বত:স্ফূর্ত মানুষের আন্দোলন। এখানে সবসময় যে সাড়া থাকে তা নয়। তবে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে রোডমার্চ কিংবা কুমিল্লায় তনু ধর্ষণের প্রতিবাদের কর্মসূচিতে মানুষের সমর্থন আমরা পেয়েছি।’
২০১৩ সালে যে দৃশ্যমান সাড়া এসেছিল এখন কি ততটা সাড়া রয়েছে কিংবা মানুষের সেই মনোভাব কি এখন আর অবশিষ্ট রয়েছে?
জবাবে ইমরান এইচ সরকার জানান, তাঁদের লক্ষ্য ছিল গণজাগরণ সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া। সেটি হয়েছে কারণ এখন যে কোনো অন্যায় হলে মানুষ গণজাগরণ মঞ্চের আদলে প্রতিবাদ করছে। ২০১৩ সালের পর অধিকাংশ আন্দোলনে সাধারণ জনগণই নেতৃত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন. ‘এর আগে গাড়িতে আগুন দেওয়া ইট পাটকেল নিক্ষেপ এগুলোই ছিল রাজনৈতিক কর্মসূচি। কিন্তু আমরা দেখিয়েছি কীভাবে রাস্তায় নীরবতা পালন করেও কর্মসূচি পালন করা যায়, কীভাবে মোমবাতি জ্বালিয়েও প্রতিবাদ করা যায়।’
কিন্তু এখন আর গণজাগরণ মঞ্চের কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা কোথায়?
জবাবে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘এখান থেকে সরে যাওয়া যে সহজ ব্যাপার তাও নয় কিন্তু শুরুতে যে ধরনের কর্মসূচি হয়েছে সেখানে পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তন এসেছে আন্দোলনের গতিতেও।’