একজন সফল মানুষের পেছনে এক বা একাধিক মানুষের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। সেই একাধিক জনের মধ্য থেকে একজন হয়ে ওঠেন সবচেয়ে বড়। যেমন ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ক্রিকেট প্র্যাকটিসে যেতে সহায়তা করতেন তার দিদি। বাবার রাগও সামাল দিতেন তিনি। তেমনই আরেকজন বড় বোনের গল্প শোনা যাক আজ। যার ছোট ভাই ভুবনেশ্বর কুমার এখন ভারতীয় জাতীয় দলের অন্যতম তরুণ তারকা।
ভুবনেশ্ব কখনোই ক্রিকেটার হয়ে উঠতে পারতেন না, যদি দিদি রেখা আধানা তার পাশে না থাকতেন। উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বাসিন্দা ভুবনেশ্বর কুমারের বাবা ছিলেন সেনাসদস্য। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতেন ভুবনেশ্বর। কিন্তু সংসারের হাল ধরতে আর্মিতে যোগ দিতে হবে- এমনটাই ভাবনা ছিল তার ও তার পরিবারের।
আর্থিক সংকটের কারণে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হওয়ার মতো সুযোগ ছিল না।
ফলে এক সম্ভাবনাময় প্রতিভার অকালেই নিজের স্বপ্ন থেকে সরে যাওয়াটা ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। এমন কঠিন সময় তার পাশে এসে দাঁড়ান দিদি রেখা। তিনিই বাবাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ভাইকে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করাতে রাজি করান। মেয়ের কথায় রাজি হয়ে বহু কষ্টে টাকা জোগাড় করে ছেলেকে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দেন বাবা।
ভুবনেশ্বরের জীবনে দিদির অবদান কেবল এইটুকুই নয়। বাড়ি থেকে অ্যাকাডেমির দূরত্ব ছিল প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার। ভুবনেশ্বরকে দিদি রেখাই নিয়ে যেতেন সেখানে। পাশাপাশি ভুবনেশ্বরের স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গেও দেখা করেন রেখা। ভাইয়ের উপরে আলাদা করে পড়াশোনার চাপ না দিতে শিক্ষকদের অনুরোধ করেন তিনি। আসলে দিদি চেয়েছিলেন, ভাইয়ের স্বপ্নের পথে যেন কোনোকিছুই বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি ভাইকে সমানে উৎসাহ দিয়ে যেতেন তিনি।
ভারতের অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলার আগে ভুবনেশ্বরের একটা ভাল স্পোর্টস শু পর্যন্ত ছিল না। নিজের জমানো টাকা থেকেই ভাইয়ের জন্য স্পোর্টস শু কেনার ব্যবস্থা করেন রেখা। এর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ভুবনেশ্বরকে। আজকের ক্রিকেট তারকা হয়ে ওঠার পেছনে দিদির অবদান সবসময় শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করেন ভুবনেশ্বর কুমার। যিনি পাশে না থাকলে স্বপ্ন থেকে বিপরীত দিকেই চলে যেতে হতো তাকে, সেই দিদির কথা তিনি কোনোদিনই ভুলতে পারবেন না।