আকাশপথে দেশের উত্তর জনপদের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ বা কানেকটিভিটির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। ভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় এই বিমানবন্দরকে আধুনিক করতে ইতিমধ্যে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চলের পুরনো অভ্যন্তরীণ এই বিমানবন্দরটি বর্তমানে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে চলাচলকারী যাত্রীদের সুবিধার্থে ব্যবহার হচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও একাধিক বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করছে। এই বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ দিয়ে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিবেচনায় ভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে সংস্কার করে আরও আধুনিক করে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কীভাবে সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে ইতিমধ্যে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ করে সরকারকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সমীক্ষা কাজ শেষ হওয়া এবং সমীক্ষা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই বিমানবন্দরটিকে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করলে ভারতের সেভেন সিস্টারভুক্ত রাজ্যগুলো এবং নেপাল, ভুটানসহ আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে আকাশপথে বাংলাদেশের যোগাযোগ সহজ হয়ে উঠবে। ভারত সরকারও এ বিষয়ে আগ্রহী। সে কারণেই ভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় এই বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ করতে সরকার আগ্রহী। সূত্র জানায়, এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক রূপ দিলে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের শুধু যোগাযোগই বাড়বে না, বরং এটি উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে আশপাশের রাষ্ট্রগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। পর্যটনের ক্ষেত্রেও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের গুরুত্ব বাড়বে। বাংলাদেশে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের নিকটবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলো এবং নেপাল ও ভুটানের পর্যটকরা বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখতে আগ্রহী হলেও শুধু দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে তাদের আগ্রহে বরাবরই ভাটা পড়ছে। এ অবস্থায় সরকার সব দিক বিবেচনায় নিয়ে সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আধুনিক ও উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের মাধ্যমে হিসেবে গড়ে তুলতে সক্রিয় হয়েছে বলে জানা গেছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি প্রায় ৯০০ একর জমির ওপর। এখন এটিকে দ্বিগুণ করে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপ-আঞ্চলিক হাব করতে হলে এর রানওয়েকেও আরও দ্বিগুণ করতে হবে। যাতে ৭৩৭-এর মতো মাঝারি ধরনের এয়ারক্রাফট ওঠানামা করতে পারে। আর এটিকে উপ-আঞ্চলিক হাব হিসেবে গড়ে তোলা হলে সরাসরি কলকাতা, আসাম, ভুটান ও নেপালের ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিদিনই শত শত যাত্রী ওঠানামা করেন এই বিমানবন্দরে।