বছর ঘুরে আবার সমাগত বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের অগ্নিঝরা মার্চ। একটি নতুন পতাকা, একটি বজ্র কণ্ঠ ভাষণ, একটি ভীষণ কালো রাত; সবমিলিয়ে ১৯৭১’র মার্চকে ধরা হয় বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত মৌসুম।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠেছিল সে আগুন যেন ছড়িয়ে পরে বাংলার সর্বত্র। এর পরে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয়দফা এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুথানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙ্গালীর জীবনে নিয়ে আসে নতুন বারতা।
আজকের এই দিনেই তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন।
১৯৭১’র ১ মার্চে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য তৎকালীন পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। রেডিওতে খবরটি প্রকাশের পরপরই পাকিস্তানবিরোধী মিছিলে অগ্রগামী হয় চট্টগ্রাম।
এরপর ২ মার্চের হরতাল, ৩ মার্চ চট্টগ্রামের বাঙালির উপর বিহারিদের চালানো গণহত্যা, গায়েবানা জানাজাসহ সংগ্রাম গাথা দিনগুলো পেরিয়ে আসে মুক্তিকামী বাঙালীর সেই দিন, যেদিন স্বাধীনতা সংগ্রামের রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন জাতির জনক। মূলত এ ভাষণের পরেই মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করে পূর্ব বাংলার মানুষ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতির পর এবারের মার্চমাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনে যোগ হবে নতুন মাত্রা। আওয়ামী লীগ ৭ মার্চ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে এ মাসেই জাতি এবার পালন করবে মহান স্বাধীনতার ৪৭ বছর। এ উপলক্ষে মাসের প্রথম দিন থেকেই শুরু হবে সভা সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । নানা আয়োজনে মুখরিত থাকবে গোটা দেশ।
২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙ্গালীর কন্ঠ চিরতরে স্তব্দ করে দেয়ার লক্ষ্যে অপারশেন সার্চলাইট নামে বাঙ্গালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় বেরিয়ে সৈন্যরা নির্বিচারে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করে।