শনিবার বিকালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন পূজা। তারপর থেকে প্রতিবেশীরা আর তাকে দেখেনি। সোমবার সকালেও পূজাকে পরীক্ষা দিতে যেতে দেখেননি তারা। তারপর পূজার মা মিঠু দেবনাথকেও দেখা যায়নি। তাদের দুইজনকেই হত্যা করেছেন পূজার বাবা। সোমবার বিকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাবড়া থানার বিশ্বাসহাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
সোমবার বিকালে পূজার বাবাকে পূজা ও তার মায়ের সম্পর্কে জানতে চান প্রতিবেশীরা। উত্তর দিতে না পেরে ছুটে বাড়ির মধ্যে ঢুকে যান বছর ৪০ বছর বয়সী শেখর দেবনাথ। শেখর দেবনাথ উত্তর না দেয়ায় সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তারাও পেছনে পেছনে ছুটে যান। বাড়ির দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন তারা।
দেখা যায়, খাটের উপর থেকে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন শেখর। প্রতিবেশীরা তাকে নিবৃত করেন। কেন আত্মহত্যা করতে গেলেন তা জানতে চাইলে কান্নায় ভেঙে পড়েন শেখর। জানান, স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে তিনি খাটের তলায় রেখে দিয়েছেন।
শেখরের কথামতো খাটের তলা থেকে উদ্ধার করা হয় মিঠু দেবনাথ (৩৫) এবং তার মেয়ে পূজার মৃতদেহ। জখম শেখরকে প্রথমে মছলন্দপুর ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের কাছে জেরায় শেখর স্বীকার করেছেন, তিনি স্ত্রী-মেয়েকে হত্যা করেছেন। শনিবার পূজা পরীক্ষা দিয়ে বাড়ির ফেরার সময় তার মা বাড়িতে ছিল না। সেই সময় শেখর প্রথমে ভারি কাঠের টুকরো দিয়ে তার মাথায় সজোরে আঘাত করেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে পূজা। এরপর তার গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। কিছুক্ষণ পর মিঠুদেবী বাড়ি ফিরলে তাকেও একই কায়দায় মারেন শেখর। তারপর প্লাস্টিকে দেহ দুটি মুড়ে ঘরের খাটের তলায় রেখে দেন।
দেহ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে ওই ঘর থেকে বিরিয়ানির প্যাকেট এবং মদের বোতলও পেয়েছে পুলিশ। শেখর জানিয়েছেন, স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যার পর তিনি মদ আর খিচুড়ি খেয়েছিলেন।
প্রতিবেশীরা জানান, প্রথমে ব্যাগ তৈরির কারখানা ছিল শেখরের। সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কাপড় সেলাইয়ের কারবার শুরু করেছিলেন। কিন্তু বছর খানেক আগে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। চিটফান্ড সংস্থায় রাখার ফলে বেশকিছু টাকা লোকসান করেছিলেন। তার উপর বাড়ি করার জন্য অনেক টাকা ধারও হয়ে গিয়েছিল। এসব কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন শেখর।