বাংলাদেশের কুমিল্লায় কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন নিহতের পরিবার।
হত্যাকাণ্ডের দু'বছর পর তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেছেন, বিচারে কোন অগ্রগতি তো হয়ই নি, বরং অভিযোগ করেছেন যে তিনি ও তার পরিবার নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ইয়ার হোসেন এক সাক্ষাতকারে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "বিচার এখনো কিচ্ছু এগোয়নি। সব আর্মি তো আমার মেয়েটাকে মারে নাই। আমি সব আর্মির কথা বলছি না। আমি বলি যে মারছে তার বিচারটা করেন"।
তিনি আরো বলেন, "আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে একটু সাক্ষাত করতে চাই। কোনও পর্যায়েই বিচার নাই। তারা খালি আমার পরিবারকেই হয়রানি করছে"।
তিনি বলছেন, "ঘর থেকে বের হলেই একদল লোক আমার পিছনে পিছনে থাকে। কোথাও গিয়ে কথাও বলতে পারি না। আমি এমনকি ডাক্তারের কাছে গেলেও সেখানে গিয়ে তারা আমাকে বিরক্ত করে।"
২০১৬ সালের ২০শে মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে সোহাগী জাহান তনুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ছিলেন এবং সেনানিবাসের একটি বাসায় প্রাইভেট পড়াতে যেতেন।
সেই বাসার আশপাশে কটি জঙ্গলে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারনা করছিলো।
তার মরদেহ দুই দফায় ময়নাতদন্ত হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় কবর থেকে মরদেহ তুলে ময়নাতদন্ত হয়েছে।
তনু হত্যাকাণ্ডের পর বিচারের দাবীতে তার কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন জোরালো আন্দোলন করেছিলো।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। কিন্তু কিছুদিন পরেই আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।
এই ঘটনায় যে মামলাটি হয় গত দু বছরে তার তদন্তের দায়িত্ব বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাহিনীর কাছে দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও র্যাবের পর এখন এর তদন্ত করছে সিআইডি। কিন্তু সেই তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। তাই এগোয়নি এই ঘটনার বিচার। এই মামলায় অভিযুক্ত কাউকে এখনো আটক করা হয়নি।
ইয়ার হোসেন বলছেন নিজের মেয়ের এভাবে হত্যাকাণ্ডের পর তিনি শোকে নিয়মিত অসুস্থ থাকছেন।
তিনি নানাভাবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছেন বলে জানান। কিন্তু পারেন নি।
মেয়ের হত্যার বিচার জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন না ইয়ার হোসেন।
তিনি বলছেন, সত্য উদঘাটন না করে বরং যাতে তারা কথা বলতে না পারেন সেজন্য বেশি মনোযোগ কর্তৃপক্ষের।
bbc banlga