প্রশ্নের ফাঁস ঠেকাতে প্রাথমিক স্তরের পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) পদ্ধতি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয় বলে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
যাতে পরীক্ষার আগ মুহূর্তে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও কোনো কাজে না আসে। সে ক্ষেত্রে যোগ্যতাভিত্তিক (সৃজনশীল) প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। আগামী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা থেকে শতভাগ যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করার কথা বলা হয়। তবে কেমন প্রশ্ন হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এমসিকিউর বদলে কোন ধরনের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কমিটি প্রস্তাব করবে। তার ভিত্তিতে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটি প্রশ্নপত্র থেকে এমসিকিউ প্রশ্ন পদ্ধতি বাদ দিয়ে বিকল্প উপায়ে প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সুপারিশ করে। জানতে চাইলে কমিটির সদস্য মো. আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রশ্নপত্র নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে ভবিষ্যতে কোন ধরনের প্রশ্নপত্র হবে, পরীক্ষাপদ্ধতি কী—এসব নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি এ বিষয়ে কাজ করছে। আগামী বৈঠকে তারা এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেবে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়, সেগুলোর মধ্যে আছে ৬৪টি জেলাকে আটটি গুচ্ছে বিভক্ত করে আট সেট প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পদ্ধতি অব্যাহত রাখা। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে শিক্ষার্থীদের আসনে বসানো, কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপযুক্ত পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছানো নিশ্চিত করা, পরীক্ষাকেন্দ্রে কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্যদের মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ করা, প্রতিবছর শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠপর্যায় থেকে দক্ষ, মেধাবী, বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষক, কর্মকর্তাদের তালিকা সংগ্রহ করে প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া, বিদেশে অবস্থিত কেন্দ্রগুলোর জন্য সরবরাহ করা প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম, আলী আজম, মোহাম্মদ ইলিয়াছ ও উম্মে রাজিয়া কাজল বৈঠকে অংশ নেন।