দেশে নতুন করে আরো তিন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশের মোট আটজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে। দেশে ফিরে আসা এক প্রবাসীর মাধ্যমে তারা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছেন।
আইইডিসিআর-এর পরিচালক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, দেশে এর নিয়ে মোট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৮ জন। তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। পাঁচজন হাসপাতালে আছেন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুটি শিশু আছে। যাদের বয়স দশ বছরের নিচে। তারা একটি উপজেলা পর্যায়ে থেকে এসেছেন। বিদেশ ফেরত একজনের মাধ্যমে তাদের পরিবারের মধ্যে ছড়িয়েছে।
৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া তিনজনের কথা জানায় আইইডিসিআর। আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী ছিলেন। তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালি থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছিলেন। তাঁদের কাছে থেকে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
১৪ মার্চ রাতে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে আরও দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই দুজনের মধ্যে একজন ইতালি থেকে এবং অন্যজন জার্মানি থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছেন।
আজ আবার নতুন করে তিনজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানাল আইইডিসিআর। আর আজই প্রথম দেশে কোনো শিশুর এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলল।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, আক্রান্ত দুই শিশুর মধ্যে একটি ছেলে, একটি মেয়ে। দুজনের বয়স ১০ বছরের কম। এবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া তিনজন বিদেশ থেকে আসা নয়। তবে ইতালি ও জার্মানি থেকে আসা আক্রান্ত দুজনের একজনের পরিবারের সদস্য তারা।
করোনাভাইরাস ছড়ানো থামাতে ওই উপজেলায় সভা-সমাবেশ, মসজিদে জামাতে নামাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসা ব্যক্তিরা কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম না মানলে তাদের জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিরা অত্যাবশ্যকীয় কারণ থাকলে যেমন চিকিৎসা, পরীক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে বাড়ির বাইরে যেতে পারেন। তবে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির আত্মীয়দের বাড়ির বাইরে যাওয়াটা আইনগতভাবে নিশ্চিত করতে পারি। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা যেন কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখেন, সে বিষয়টি কঠিনভাবে পালন করতে হবে।
এছাড়া কারো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ হলে আইইডিসিআরে আসতে হবে না। আইইডিসিআর নিজেই নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে বলে জানান তিনি। এক্ষেত্রে হটলাইন নাম্বারের সহায়তা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনার প্রাদুর্ভাব হয়। পরে তা চীনসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৬৯ হাজার।