নেদারল্যান্ডে বিসিজি টিকা নিয়ে এক গবেষণায় জানা যায়, বিসিজি টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের করোনাজনিত অসুস্থতা কম থাকে। তবে বিসিজি টিকার কারণে করোনার সংক্রমণ কম হয় কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস ও জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ২৪ জন বিশেষজ্ঞ এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। ৫ আগস্ট তাঁদের গবেষণা প্রবন্ধটি চিকিৎসাবিজ্ঞান সাময়িকী সেল রিপোর্টস মেডিসিন প্রকাশ করেছে।
মহামারির শুরু থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা সংক্রমণের ধরন ও কারণ বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বেশ কয়েকটি ধারণা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলোচনা হতে দেখা যায়। এসব নিয়ে বিজ্ঞান সাময়িকীতে লেখা প্রকাশ পেতে থাকে। গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বা বিসিজি টিকা পাওয়া জনগোষ্ঠীতে করোনার প্রকোপ কম দেখা যাচ্ছে—এসব ধারণা একসময় বেশ গুরুত্ব পেতে থাকে।
এপ্রিল মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, করোনার ওপর বিসিজি টিকার প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য একাধিক গবেষণা চলছে।নেদারল্যান্ডসে গবেষণায় ৪৩০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এঁদের মধ্যে ২৬৬ জন ছিলেন বিসিজি টিকা নেওয়া। ১৬৪ জন বিসিজি টিকা পাননি। তবে টিকা পাওয়া ও না-পাওয়া সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। গবেষকেরা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই দফায় এঁদের ওপর জরিপ পরিচালনা করেন।
গবেষকেরা বলছেন, করোনা মহামারিকালে বিসিজি টিকা নিরাপদ। এই টিকা কোনো মারাত্মক প্রদাহের কারণ হয়ে দেখা দেয় না। এই টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে করোনাজনিত অসুস্থতা ও মারাত্মক ক্লান্তি কম দেখা গেছে। তবে এই টিকা দেওয়ার কারণে করোনা সংক্রমণ কমে কি না, তা নিয়ে বড় ধরনের গবেষণা হওয়া দরকার।
দেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩২। এই হার ইউরোপ বা আমেরিকার হারের চেয়ে কম। এমনকি ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে কম। প্রতিবেশী এই দুই দেশে মৃত্যুহার যথাক্রমে ২ ও ২ দশমিক ১। ওই দুই দেশে টিকাদানের হার বাংলাদেশের চেয়ে কম।