নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের সাময়িক বহিষ্কৃত চার প্রকৌশলীসহ আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বিকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আটজনের মধ্যে রয়েছেন তিতাসের ফতুল্লা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক মাহামুদুর রহমান রাব্বী, সহকারী প্রকৌশলী এসএম হাসান শাহরিয়ার, সহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া, সিনিয়র সুপারভাইজার মো. মুনিবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র উন্নয়নকারী মো. আইউব আলী, হেলপার মো. হানিফ মিয়া ও কর্মচারী মো. ইসমাইল প্রধান।
গতকাল বিকালে গ্রেফতারকৃত আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি পুলিশ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করে প্রেরণ করা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ পুলিশের সাবইন্সপেক্টর রবিউল আলম আদালতকে বলেন, তল্লা মসজিদের বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩২ জন মারা গিয়েছেন। বিষয়টি বাংলাদেশের আলোচিত ঘটনা। গ্রেফতারকৃত আসামিদের অবহেলার কারণেই তিতাস গ্যাসের লাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গত হয়। বিদ্যুতের লাইন পরিবর্তনের সময় স্পার্ক করে আগুনের সূত্রপাত হয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। তাই এত মানুষের প্রাণহানিহয়। এ কারণে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তাই রিমান্ড মঞ্জুরের জন্য আবেদন জানান তিনি।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ জানান, আসামিরা কেউ ছয় মাস, কেউবা সাত মাস. কেউবা তারও কম সময় ধরে নারায়ণগঞ্জে কর্তব্যরত রয়েছেন। মসজিদে বিস্ফোরণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। এ কারণে রিমান্ডের বিরোধিতা করে আসামিদের জামিন প্রার্থনা করেন তিনি। তবে আদালত দুই পক্ষের শুনানি শেষে চার প্রকৌশলীসহ আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে ঘটনার পর ৫ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা থানা পুলিশ বাদী হয়ে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে মামলা করে। মামলাটি নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল আলম বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলা সিআইডি তদন্ত করলেও জেলা পুলিশ তদন্তে সহায়তা করছে। এ ঘটনার সঙ্গে কারো সম্পৃক্ততা খুঁজে পেলে জেলা পুলিশ তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে।
গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিআইডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ডিআইজি মো. মাঈনুল হাসান বলেন, ‘সকালে সদর উপজেলার ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাসের সাময়িক বহিষ্কৃত আট কর্মকর্তা ও কর্মচারীর গাফিলতি থাকায় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিস্ফোরণের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে। মসজিদ কমিটির গাফিলতি পাওয়া গেলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।