গ্রাহকদের কাছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানি তিতাসের। এই বকেয়া দ্রুত আদায়ে তৎপর হতে কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ তাগিদ দেওয়া হয়।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রাহক পর্যায়ে তিতাসের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। বকেয়ার মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ৭৩৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং বেসরকারি গ্রাহকের কাছে ৩ হাজার ৮৮২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
সংসদীয় কমিটিকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বকেয়া আদায়ের জন্য প্রচার, লিফলেট বিতরণ, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার, নোটিশ প্রদান এবং বিশেষ ক্ষেত্রে গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।
তাছাড়া ব্যাসায়িক সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমই এবং সরকারি দপ্তরগুলোর সঙ্গে পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন তারা। তবে এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়নি সংসদীয় কমিটি। তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমিটিকে জানান, বিল করার পরে শিল্পের ক্ষেত্রে ৪৫ দিন, আবাসিকের ক্ষেত্রে ২১ দিন ও সিএনজির ক্ষেত্রে ২০ দিনের সময় দেওয়া হয়। কিন্তু এই সময়ে অনেকে বিল পরিশোধ না করার কারণে এই বকেয়া বাড়ছে।
আবাসিকে গ্যাসের সংযোগ বন্ধ থাকার পরও কীভাবে সংযোগ দেওয়া হচ্ছে তা নিয়েও গতকালের বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। তারা বলেন, এর নেপথ্যে তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত। এসব অসাধু ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির সুপারিশ করেছে কমিটি।
এদিকে বৈঠকে বিদ্যুত্ ও জ্বালানির মূল্য বছরে একাধিকবার পরিবর্তনের সুযোগ রেখে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধনের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বিলে সায় দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গত ২৩ জুন সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। গত ডিসেম্বরে বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কমিশন নির্ধারিত ট্যারিফ কোনো অর্থবছরে কমিশনের একক বা পৃথক পৃথক আদেশ দ্বারা, প্রয়োজন অনুসারে এক বা একাধিকবার পরিবর্তন করতে পারবে। এই বিধান কার্যকর হলে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বছরে এক বা একাধিকবার বিদ্যুত্, গ্যাস, ডিজেল, পেট্রলসহ জ্বালানির দাম পরিবর্তন করতে পারবে।