টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিটিআরসিকে সহায়তা করার যে কথা বলেছিলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়েও তার পুনরাবৃত্তি করেছেন মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেছেন, ‘খবরদারি’ করার জন্য নয় বরং বিটিআরসিকে সহযোগিতা করার জন্যই তিনি এসেছেন।
তার সময়ে বিটিআরসির কাছে অন্যায় কোনো অনুরোধ করা হবে না বলেও নিশ্চিত করেন তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা থেকে সদ্য মন্ত্রী হওয়া মোস্তাফা জব্বার।
টেকনোক্রেট মন্ত্রী হিসেবে গত ২ জানুয়ারি শপথ নেন মোস্তাফা জব্বার। পরদিন তাকে দেওয়া হয় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহ পর বুধবার দুপুরে বিটিআরসিতে যান তিনি।
সেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মন্ত্রী বলেন, “আপনাদের যদি ধারণা হয়ে থাকে মোস্তাফা জব্বার আপনাদের বস হয়ে এসেছেন অথবা আপনাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এসেছেন বা খবরদারি করার জন্য এসেছেন তবে ধারণাটা ঠিক না। আমি আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য কাজ করব।
তিনি বলেন“রশি যখন টানবেন তখন অল্প একটু হলেও একটি হাত যুক্ত হবে, ফলে অল্প একটু শক্তি হলেও আপনাদের সাথে যুক্ত হবে।”
২০১০ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন সংশোধনের পর টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত ক্ষমতা বিটিআরসি থেকে মন্ত্রণালয়ের কাছে চলে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স ইস্যুসহ অন্যান্য বিষয়ে বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টানাপড়েন চলে।
তারানা হালিম এই বিভাগের প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় সংস্থার কাজে স্থবিরতার জন্য মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে বিটিআরসিকে স্বাধীন কমিশনে রূপান্তরের পক্ষে চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বক্তব্য দিয়েছিলেন।
বিটিআরসির স্থবিরতার জন্য বিভিন্ন কাজে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদন পেতে বিলম্ব হওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছিলেন তিনি।
এই খাত নিয়ে এখনো শিখছেন জানিয়ে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আমি এখনো শিখছি, জানার চেষ্টা করছি, দিক নির্দেশনা দেওয়া বা অন্যান্য বিষয়ে কথা বলা এ মুহূর্তে মনে করি ঠিক হবে না।”
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নিজেদের দায়িত্ব সততা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করবেন। আমি আপনাদের কাছে অন্যায় কোনো অনুরোধ করব না। যদি আমি ভুলক্রমে করি তবে আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবেন আইনসঙ্গত নয়, আমি নিজেকে সংযত করে নেব। আমিও চাইব না আপনারা নীতি বা বিধানের বাইরে কোনো কাজ করেন।”টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ইতিমধ্যে অনেক কাজ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২০০৯ সাল থেকে যা যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে করা হয়েছে তা অসাধারণ মাত্রার মধ্যে বিরাজ করে। এই বিরাজ করার জায়গাটা, আমাদের দায়িত্ব তা সামনে নিয়ে যাওয়া।”
ডিজিটাল মহাসড়ক বানানোর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ করতে বিটিআরসির সহযোগিতা চান মন্ত্রী।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে মাথায় রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ইন্টারনেটের গতি বা সাশ্রয়ী মূল্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমাদের ইন্টারনেট নিরাপদ করতে হবে, জনগণ যেন নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার করে তা নিশ্চিত করতে হবে। ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারব না, নিরাপদ করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।”
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, “আমি যখন এখানে দায়িত্ব নিই, তখন গুঞ্জন উঠেছিল অনেক দিনপর বিটিআরসিতে টেকনিক্যাল লোককে আনা হয়েছে, একই সুরে বলব টেকনিক্যাল সংগঠনের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী টেকনিক্যাল লোককে আমাদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রেরণ করেছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”