বাংলা ভাষার অসামান্য প্রতিভাধর কথা সাহিত্যিক শওকত আলী আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে আরিফ শওকত পল্লব। তার বড় ছেলে চিকিৎসক আরিফ শওকত পল্লব জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে তার বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
ফুসফুসের সংক্রমণ, কিডনি জটিলতা ও হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে গত ৪ জানুয়ারি ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শওকত আলী।
প্রথমে আইসিইউতে রাখা হলেও পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে ল্যাব এইড থেকে নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে।
১৯৩৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার থানা শহর রায়গঞ্জে জন্ম নেন শওকত আলী।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, অজিত গুহ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন গুণী এ সাহিত্যিক।
পারিবারিকভাবেই বেড়ে উঠেছেন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। ছোটবেলা থেকেই তিনি সংস্পর্শে এসেছেন বইয়ের। নবম শ্রেণিতে পড়াকালেই তার লেখালেখি জীবনের সূচনা হয়। দেশ ভাগের পর দিনাজপুরে এসে তিনি প্রথম গল্প ছাপান। গল্পটি ছাপা হয়েছিল কলকাতার বাম ঘরানার পত্রিকা ‘নতুন সাহিত্য’তে।
তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে ‘প্রাদোষে প্রাকৃতজন’, ‘অপেক্ষা’, ‘ওয়ারিশ’, ‘গন্তব্যে অতঃপর’, ‘উত্তরের খেপ’, ‘জননী’, ‘পিঙ্গল আকাশ’ প্রভৃতি অন্যতম। তার ত্রয়ী উপন্যাস নামে খ্যাত ‘দক্ষিণায়নের দিন’, ‘কুলায় কালস্রোত’ এবং ‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন’এর জন্য তিনি ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। এ ছাড়া ১৯৬৮ সালে তিনি অর্জন করেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।